খুলনায় এ বছর ২ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে তরমুজ। বীজ, সার, কীটনাশক ও সকল প্রকার সরঞ্জমাদি বিনামূল্যে পাচ্ছেন কৃষকরা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট কৃষকদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করছে। তাদের পরামর্শে কৃষকরা ঝুঁকছেন তরমুজ চাষে।
আরও পড়ুন: খুলনায় লবণাক্ত এলাকায় তরমুজের বাম্পার ফলন
জানা গেছে, খুলনার দেবীতলা, বয়ারভাঙ্গা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরায় ৮০০ জন তরমুজ চাষি রয়েছেন। সেচ পাম্প গত বছর ছিল ১৫০টি এবং এ বছর ২৫০টি পাম্প দিয়ে কৃষক সেচ দিচ্ছেন। বীজের বপনকাল ছিল মধ্য জানুয়ারি হতে মার্চ পর্যন্ত। গাছে ফল ধরেছে। গাছের পরিচর্যা করছেন কৃষক। কৃষকদের সেচের একমাত্র উৎস ছিল ভরাখালি খাল। তাও শুকিয়ে চৌচির হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন কৃষকরা। তারা খরার হাত থেকে ফসল বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। কৃষকদের বাঁচাতে এগিয়ে আসে গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প (এসআরডিআই অংগ)।
আরও পড়ুন: অসময়ে তরমুজ চাষে ভাগ্যবদল রূপসার ২০ চাষির
গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের পক্ষ থেকে ১২০০’ বিঘা তরমুজ খেতে দু’টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এতে স্বস্তি পেয়েছেন কৃষকরা। নলকূপ থেকে পানি দেয়া হচ্ছে তরমুজ খেতে। এখন শুধু সবুজের সমারহ। যতদূর চোখ যায় শুধু তরমুজ আর তরমুজ।
এ বছরই প্রথম তরমুজ চারা পদ্ধতিতে রোপণ করা হয়েছে। আগে চারা তৈরি করে খেতে রোপন করলে দ্রুত বড় হয় এবং সময় কম লাগে। এতে আগে থেকেই ফসল কাটা যায়। ঝড়, বৃষ্টি ও দুর্যোগ আসার আগেই ফসল বিক্রি করা যায়।
গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রশিক্ষণ,বীজ, সার ও নানা রকম উপকরণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:ঘেরের পানির ওপর মাচায় ঝুলছে রসালো তরমুজ
বটিয়াঘাটার ঘাগরামারী গ্রামের কৃষক রহিমা খাতুন, দেবীতলা গ্রামের অংশুমান রায়, আব্দুল হালিম হাওলাদার, বনস্পতি রায়, ওমর আলী ও রঞ্জন রায় বলেন, আমরা গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প (এসআরডিআই অংগ) থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ফসল আবাদ করেছি। বিনামূল্যে সব কিছু পেয়েছি। ফসল উৎপাদন ভালো হয়েছে।
সূত্র জানান, গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ৫টি জেলার কৃষি উন্নয়নের জন্য নানা মুখি গবেষণা পরিচালনা করে আসছে। তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকছেন চাষিরা। তরমুজের ক্ষেত্রে আসছে পরিবর্তন। গত বছর এই উপজেলায় প্রকল্পের সহায়তায় তরমুজ উৎপাদিত এলাকা দেবীতলা ও বয়ারভাঙ্গা তরমুজের চাষ হয়েছিল ৭৫০ হেক্টর। এ বছর ৮৫০ বৃদ্ধি পেয়ে চাষ হয়েছে ১৬০০ হেক্টর জমিতে।
খুলনা জেলায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে তরমুজের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। খুলনায় গত বছর তরমুজ উৎপাদিত এলাকার পরিমান ছিল ৩ হাজার ৮৫ হেক্টর জমি। এ বছর খরিফ-১ মৌসুমে আবাদকৃত তরমুজ চাষের পরিমাণ ২ হাজার হেক্টর জমি। বাগেরহাটে গত বছর এর পরিমান ছিল ১১৩ হেক্টর। এ বছর খরিফ-১ মৌসুমে এই এলাকায় ৭৮ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। এ বছর তরমুজ চাষের এলাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট খুলনা বিভাগীয় মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সচীন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করা হয়েছে। প্রশিক্ষণালদ্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সঠিক নিয়মে চাষাবাদ করলে দ্বিগুণ ফসল উৎপাদন হবে।
তিনি বলেন, কৃষকদের সার, বীজ প্রশিক্ষণসহ সকল প্রকার সরঞ্জামাদি বিনামূল্যে প্রদান করা হয়েছে। চারা তৈরি করে রোপন